খন্দকার আমিনুর রহমান : নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেছেন, রাজনৈতিক দলে ৩৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের লক্ষ্য অর্জনে আরও কাজ করতে হবে।
আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্ক আয়োজিত ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের নির্দেশনা অনুসারে রাজনৈতিক দলসমূহে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ব্যাপারে’ নির্বাচন কমিশন ও অপরাজিতাদের এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘অপরাজিতারা যে অনেক শক্তিশালী অনেক বড় প্লাটফর্ম এখানে না আসলে বুঝতে পারতাম না। আপনারা যোগ্যতা ও দায়িত্ব নিয়ে অনেক ভালো ভালো কাজ করছেন আপনাদের অধিকার একদিন অবশ্যই পূরণ হবে, হতাশ হলে চলবে না।’
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলে ৩৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হলে, অপরাজিতাদের অনেক কাজ করে যেতে হবে। তিনি এ সময় অপরাজিতাদের দাবীগুলো কমিশনের মিটিং এ উপস্থাপন করার আশ্বাস দেন।
সংসদ সদস্য আরমা দত্ত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন। এ সময় তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নিজেদের উন্নয়নের জন্য আরো বেশী কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, নারীরা ঘরেও কাজ করতে পারে, বাহিরে কাজ করতে পারে।
আলোচনা সভায় জাতীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সদস্য ও বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাছিমুন আরা হক মিনু বলেন, ‘যে সকল রাজনৈতিক দল এখনও ৩৩ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পারেনি। নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ করছি, আপনারা সেসব রাজনৈতিক দলকে আরো বেশী মনিটরিং করুন।’
রংপরের অপরাজিতা মঞ্জুশ্রী সাহা বলেন, আমরা নিজেরা যদি অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে না পারি তাহলে রাজনৈতিকভাবে খুব বেশী দূর এগুতে পারবো না।
অপরাজিতা এডভোকেট সোনিয়া বলেন, আমাদের নারীদের সার্বিক যোগ্যতা থাকার পরও রাজনীতিতে ভালো অবস্থান করতে পারছেন না।
বরিশালের অপরাজিতা অধ্যাপিকা শাহেদা বেগম বলেন, দেশে নারী, পুরুষ সমান সমান এখানে আবার ৩৩ শতাংশ কি, রাজনৈতিক দলে সমান সমান পদ-পদবী হলে দোষের কী?
চট্টগ্রামের অপরজিতা এডভোকেট দিল আফরোজ বলেন, রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম প্রতিনিয়ত পর্যাবেক্ষণ করলে নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।
দিনাজপুরের অপরাজিতা লায়লা বানু বলেন, নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা এমনকি যাচাই-বাছাইসহ গেজেটে নারীদের নাম সবার শেষে থাকে। কমিশনারকে এই বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দেয়ার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডেমক্রেসিওয়াচের নির্বাহী পরিচালক ওয়াজেদ ফিরোজ। তিনি বলেন, এই প্রকল্প অপরাজিতা ও রাজনৈতিক দলের সাথে কাজ করেছে, যত বেশী নারীদেরকে সম্পৃক্ত করা যাবে, নারীদের রাজনৈতিক দলে পদ-পদবী পাওয়া সহজ হবে। সঞ্চালনা করেন হেলভেটাস-সুইস ইন্টারকোঅপারেশনের প্রতিনিধি ও অপরাজিতা প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক ফৌওজয়া খোন্দকার। মূল প্রবন্ধ ও দাবীগুলো উপস্থপান করেন খুলনার অপরাজিতা আকলিমা সুলাতানা তুলি। অন্যান্যদের বিআইজিডি এর সিনিয়র ফেলো অব প্রাকটিস মাহিন সুলতান, সাবেক সংসদ সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনি, হেলভেটাস-সুইস ইন্টারকোঅপারেশন ও প্রকল্পের পরিচালক প্রশান্ত ত্রিপুরাসহ, ছয়টি বিভাগ থেকে আসা আরো ৪০ জন ‘অপরাজিতা’, সাংবাদিক, বাস্তবায়নকারী সংস্থাসমূহের কর্মকর্তা ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সুইজারল্যান্ডের (এসডিসি-এর) সহযোগিতায়, হেলভেটাস-সুইস ইন্টারকোঅপারেশনের ব্যবস্থাপনায়, রূপান্তর, প্রিপ ট্রাস্ট, খান ফাউন্ডেশন ও ডেমক্রেসিওয়াচ- অপরাজিতা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে আসছে। সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬টি জেলাধীন ৬২টি উপজেলার ৫৪০টি ইউনিয়নে অপরাজিতা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সকলে দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন অপরাজিতাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।
https://slotbet.online/