শরীরের কাজকর্মগুলো সঠিক ভাবে চালানোর জন্য সারা দেহে রক্তের সঞ্চালন ভালো হওয়া জরুরি। শরীরের ভেতর রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করলে কিন্তু নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। এই কারণে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। রক্ত সংবহনতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ দুই অংশ হল শিরা এবং ধমনী। ধমনীর মাধ্যমে অক্সিজেনযুক্ত বিশুদ্ধ রক্ত শরীরের প্রতিটি অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে, আর শিরা দূষিত রক্ত বহন করে নিয়ে যায়। কোথাও কেটে, ছড়ে গেলে যদি রক্ত বেরোয় তা হলে শরীরে উপস্থিত বিভিন্ন প্রোটিনের সাহায্যে তা জমাট বেঁধে যায়। তবে অস্বাভাবিকভাবে রক্তনালির ভিতরে রক্ত জমাট বাঁধা বিপজ্জনক।
কী কী কারণে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধে?
১) বয়সজনিত কারণে অনেকের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। তবে অল্প বয়সীদেরও হতে পারে এই রোগ।
২) ক্যানসারের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও এই রোগ হতে পারে। অধিক গর্ভনিরোধক ওষুধের ব্যবহারের কারণেও এই ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। পাশাপাশি অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রেও এ ধরনের সমস্যা প্রায়ই দেখা যায়।
৩) দীর্ঘ দিন শারীরিক কোনো সমস্যার কারণে যাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, প্যারালিসিসের মতো শারীরিক অসুস্থতার কারণে যাঁরা দীর্ঘ দিন চলাফেরা করতে পারেন না— তাদের ক্ষেত্রেও থ্রম্বোএম্বলিজমের ঝুঁকি তৈরি হয়।
৪) হৃদ্যন্ত্রে কোলেস্টেরল জমাট বাঁধলেও রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধে। ওবেসিটি, ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, লিপিড প্রোফাইলের তারতম্যে, সিক্ল সেল অ্যানিমিয়ার কারণেও রক্ত জমাট বাঁধে।
৫) থ্রম্বোএম্বলিজমের সমস্যা কিন্তু জিনবাহীও হতে পারে। রক্তে থাকা প্রোটিনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে অল্প বয়সেই এ ধরনের সমস্যা হয়। তাই পারিবারিক ইতিহাসে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা থাকলে সন্তানেরও এই সমস্যা হতে পারে।
কোন কোন উপসর্গ দেখে সতর্ক হবেন?
১) হাতে, পায়ে রক্তজ মাট বাঁধলে সেই অংশে ব্যথা হয়। অংশটি ফুলেও যেতে পারে। ওই স্থান ছড়ে গিয়ে জ্বালা ভাবও হতে পারে। কোনও চোট-আঘাত না পেয়েও এমন উপসর্গ দেখতে পেলে সতর্ক হোন।
২) কখনো কখনো শরীরে কোনো অংশে রক্ত জমাট বাঁধলে সেই অংশটি লাল হয়ে যায়। কখনো আবার বিবর্ণও দেখায়। শরীরের ওই অংশে রক্তের অভাবের কারণেই ত্বক বিবর্ণ দেখায়। তাই শরীরের কোনো অংশ যদি বিবর্ণ দেখায়, সেখানে ব্যথা হয়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৩) ফুসফুসেও রক্তজমাট বাঁধতে পারে। সে ক্ষেত্রে শরীরে অক্সিজ়েনের ঘাটতি শুরু হয়। এর ফলে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যায়। এর পাশাপাশি তীব্র কাশি, কাশির সঙ্গে রক্তপাত শুরু হলেও সতর্ক হতে হবে। মাথায় রক্ত জমাট বাঁধলে মাথা ঘোরানো, মাথা ব্যথা, কথা বলতে সমস্যা, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
https://slotbet.online/