রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে ২৮শে ডিসেম্বর সকালে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার উদ্যোগে এক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মুহাম্মদ আলতাফ হোসেন কর্তৃক প্রস্তাবিত ২১ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি মোঃ মমিনুর রশীদ শাইনের সভাপতিত্বে এবং সংস্থার কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের মহাসচিব মুহাম্মদ কামরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্য বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বলেন, “সাংবাদিকরা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে। তাদের রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে আরও বেশি সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন।
বিশেষ অতিথি বক্তব্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী সাংবাদিকদের হলুদ সাংবাদিকতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, “বর্তমান সরকার ২১ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে পারে, এবং এ লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে।”
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম সাংবাদিকদের আত্মসমালোচনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, “নিজেদের দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে সাংবাদিকতাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।”
এছাড়াও জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার নীতি নির্ধারক পরিষদের সভাপতি এবং প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মুহম্মদ আলতাফ হোসেনের স্ত্রী আছিয়া বেগম, তার সন্তান ডা. মুঃ মনির হোসেন ও মুঃ মনজুর হোসেন।
তাছাড়া সংস্থার উপদেষ্টা মোঃ শাহজাহান মোল্লা, মোঃ আলমগীর গনি, মোঃ আবুল বাসার মজুমদার, সহ-সভাপতি ও মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মোঃ খাইরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি এম আর প্রিন্স, মোঃ আতিকুর রহমান আজাত, মোঃ জামাল হোসেন ও মোঃ হাসান সর্দার জুয়েল, মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও সংস্থার যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল মজিদ, সহকারী মহাসচিব মোঃ সাজাদুর রহমান সাজু, সাংগঠনিক সচিব মোঃ রাসেল সরকার ও মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান ওয়াহিদ, অর্থ সচিব মোঃ আবেদ আলী, দপ্তর সচিব মোঃ রাব্বী মোল্লা, আইন সচিব এড. ওয়াহিদুর নবী বিপ্লব, প্রচার ও প্রকাশনা সচিব মোঃ আঃ সবুর, পরিকল্পনা ও গবেষণা সচিব মোঃ সাইফুল ইসলাম, জনকল্যাণ সচিব মোঃ রাসেল ইসলাম জিবন, তথ্য ও প্রযুক্তি সচিব মোঃ বাপ্পি আহমেদ শ্রাবণ, মহিলা বিষয়ক সচিব আমেনা বেগম, সহ বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের এবং বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দরা বক্তব্য দেন।
দেশের বিভিন্ন বিভাগ, মহানগর, জেলা ও উপজেলা থেকে আগত সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এই মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা মরহুম মুহাম্মদ আলতাফ হোসেন প্রস্তাবিত ২১ দফা বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং সরকারের কাছে এই দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষা এবং পেশার মর্যাদা বৃদ্ধিতে এই সমাবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সাংবাদিকদের ২১ দফা দাবি সমূহঃ
১. গণমাধ্যম ও গণমাধ্যম কর্মীদের দমনকারী সকল কালাকানুন বাতিল।
২. সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ প্রেস কাউন্সিলে নিষ্পত্তি।
৩. সাংবাদিক পেনশন স্কিম গ্রুপ বীমা ও অন্যান্য সুবিধা চালু।
৪. ষাটোর্ধ্ব বয়স্ক সাংবাদিকদের সরকারি কোষাগার থেকে ভাতা প্রদান।
৫. সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী দণ্ডবিধি প্রয়োগ ও গ্রেফতার পরিহার।
৬.পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ক্ষতিগ্রস্থ সাংবাদিকদের ক্ষতিপুরণ প্রদান।
৭. বিভাগীয় শহরে পিআইবির শাখা স্থাপনসহ সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ।
৮. জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অগ্রাধিকার।
৯. সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আর্থিক সহযোগিতা।
১০. জাতীয় সাংবাদিক অধিকার সনদ প্রণয়ন।
১১. সাংবাদিক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন।
১২. প্রেস কমিশন গঠন করে গণমাধ্যমের জন্য শিল্পনীতি প্রণয়ন।
১৩. গ্রামীণ সাংবাদিকদের নিয়োগপত্র প্রদান ও বেতন বোর্ড রোয়েদাদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত।
১৪.টেলিভিশন ও রেডিও সাংবাদিকদের বেতন কাঠামো সমতা।
১৫. বিজ্ঞাপন নীতিতে সুষম নীতি অনুসরণ।
১৬. ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত।
১৭. সামাধ্যম নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ পরিহার।
১৮.বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনকে সরকারি নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখা।
১৯. বেকার সাংবাদিকদের কর্মসংস্থান বা ভাতা প্রদান।
২০.প্রথিতযশা সাংবাদিকদের রচনা বাংলা একাডেমি বা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রকাশের উদ্যোগ
২১.অনলাইন সংবাদমাধ্যমের জন্য সহজ নীতিমালা
সভা শেষে সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখায় শ্রেষ্ঠ জেলা শাখা হিসেবে ঝালকাঠি জেলা শাখা কে ক্রেষ্ট প্রদান করেছেন কেন্দ্রীয় কমিটি। ক্রেষ্ট গ্রহণ করেন ঝালকাঠি জেলা শাখার সভাপতি মোঃ এমদাদুল হক ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু।
https://slotbet.online/