নিজস্ব প্রতিনিধি : ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন না করেও ঝালকাঠি রাজাপুরের কাঠিপাড়া গ্রামের ইউনুচ আলী ডাকুয়া প্রতারণার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছেন বলে দীর্ঘ দিন ধরে এলাকাবাসি অভিযোগ করে আসছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময় সর্বহারা পার্টির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। যাহার নেতৃত্বে ছিলেন ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন। এমনকি তৎকালিন সময়ে এই অমুক্তিযাদ্ধা ইউনুচ আলী ডাকুয়ার নামে রাজাপুর থানায় অনেকগুলো মামলা চলমান ছিল। যার একটি মামলা হলো মামলা নং ২০৭/৭৩। এক পর্যায়ে তিনি সামাজিতভাবে অপদস্ত হয়ে মানুষের বাড়িতে দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালাতেন। ২০১১ সালের পূর্বে কোন গেজেটে ইউনুচ আলী ডাকুয়ার নাম ছিল না। বহু পূর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১১ সালে তার ছেলে অত্যন্ত দূরন্দার শফিউল বাসার বাদল ওরফে প্রক্সি বাদল সরকারি উচ্চ পদে চাকুরিতে প্রবেশ করার জন্য ওই সময়ে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে যথা ১)ও আওয়ামীলীগের সাবেক সাংসদ আমির হোসেন আমু ২) আওয়ামীলীগের সাবেক সাংসদ শ.ম রেজাউল করিম ৩) রাজাপুর থানা মুজিব বাহিনীর প্রধান রাজাপুর থানা আওয়ামীলীগ নেতা মো: নুর হোসেন ৪) মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপকমিটির সহ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির ওরফে টকশো মনির এবং রাজাপুর আওয়ামীলীগ নেতা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিলন মাহমুদ বাচ্চু মৃধা এদের সহযোগীতায় অবৈধ অর্থের বিনিময় মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ইউনুচ আলী ডাকুয়াকে বেসামরিক গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার নাম বিগত ২৬ ডিসেম্বর ২০১১ সালে লিপিবদ্ধ করান। অথচ তাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় যে, তিনি কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন? কোথায় প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছেন? মুক্তিযুদ্ধে তার ব্যবহৃত অস্ত্রের নাম কি ছিল? কোন সেক্টরে তিনি যুদ্ধ করেছেন ও সেক্টর কমান্ডারের নাম কি? ইত্যাদি কোন কিছুই তিনি বলতে পারবেন না। পরবর্তীতে তার ২ ছেলে বাবার মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় চাকুরি নেন। তার প্রথম ছেলে শফিউল বাসার বাদল সহকারী রেভিনিউ অফিসার, কাস্টমস বর্তমানে খুলনা জোনে কর্মরত আছেন, দ্বিতীয় ছেলে মো: মাসুম বিল্লাহ সহকারী প্রকৌশলী, গৃহায়ন গণপূর্ত মন্ত্রনালয়, ঢাকা আগারগাঁও-তে কর্মরত আছেন। দুই ছেলে সরকারী চাকুরিতে প্রবেশের পর আলাদিনের চেরাগের মত নিজ গ্রাম কাঠিপাড়া রাজাপুর, বরিশাল এবং ঢাকায় নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। এই অমুক্তিযোদ্ধা ইউনুচ আলী ডাকুয়া তিনি অবৈধ টাকার বিনিময় ঘরে তুলেছেন বিশাল ক্যাডার বাহিনী।দুই ছেলের মধ্যে বিশেষ করে শফিউল বাসার বাদল ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিষয়ে যখন যাকে প্রয়োজন তাকে ম্যানেজ করেন। তাদের বিরুদ্ধে কোন তথা বললে পুলিশী মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানি করেন। যখন যে সরকার দলীয় লোকজন ক্ষমতায় থাকে তাদেরকে বিপুল পরিমান টাকা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেন। এই অমুক্তিযোদ্ধার বিষয়ে যদি কেউ কোন ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ করেন তারা জানতে পারলে ওই ব্যক্তিকে নানানভাবে হেনস্তা করেন। যেমন ইতি পূর্বে তিনি যখন অবৈধভাবে তার বাবা মো: ইউনুচ আলী ডাকুয়ার মুক্তিযোদ্ধার সনদ বের করেন তখন এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ তার বিরোধিতা করেন। কারণ তারা জানেন যে, তিনি কোন মুক্তিযোদ্ধা নন। বিগত ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৪ তারিখে প্রতিবাদ স্বরুপ একই এলাকার সরকারী প্রা: বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাজি এসকান্দার আলী ফরাজি এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। যার প্রেক্ষিতে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মো: ইউনুচ আলী ডাকুয়ার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা স্থগিত হয়। তবে তার ছেলে শফিউল বাসার বাদল মোটা অংকের অবৈধ টাকার লেনদেন করেন। যার কারণে এই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করা সম্ভব হয় নাই। পরবর্তীতে যিনি অভিযোগ দিয়েছেন তার বসত ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় ওই অভিযুক্তরা। ইউনুচ আলী ডাকুয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া একই এলাকার ওয়ার্ড যুবদল নেতা বায়েজীদ খানকে একটি ডাকাতি মামলায় অজ্ঞাত আসামীদের মধ্যে ডুকিয়ে টাকা পয়সার বিনিময়ে গ্রেফতার করিয়ে জেল হাজতে প্রেরণের ব্যবস্থা করে। সে বর্তমানে কারান্তরীণ রয়েছে। ইউনুচ আলী ডাকুয়ার বিরদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ে অবস্থাননকারী সকলকে অজ্ঞাত মামলায় জড়িয়ে জেল খাটানোর ভয় ভীতি দেখাচ্ছে।
যারা এই ইউনুচ আলী ডাকুয়াকে মুক্তিযোদ্ধা করার জন্য জোর সুপারিশ করেছিলেন (আমির হোসেন আমু ও শম রেজাউল করিম) তাদেরকে ইতিমধ্যে অন্তবর্তীকালিন সরকার তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করেছে। এছাড়াও অমুক্তিযোদ্ধা ইউনুচ আলী ডাকুয়ার বিরুদ্ধে ঝালকাঠি রাজাপুরের কাঠিপাড়া গ্রামের এলাকাবাসি বিগত ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট বিগত ১৯ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে দূর্ণীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর বিগত ২০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে মাননীয় উপদেষ্টা বরাবর বিগত ২৪ নভেম্বর ২০২৪ তারিখের গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর, বিগত ২৪ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর , একই তারিখে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন যাতে করে তার অবৈধভাবে গ্রহনকৃত মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থ গ্রহন করাসহ এবং ২ ছেলের জালিয়াতি করে নেয়া সরকারী চাকুরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করে তাদের ব্যাপারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবী এলাকাবাসির।
১৯৭১ সালে দখলদার পাকিস্তানী বাহিনী কবল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে বাঙ্গালী জাতি ও মুক্তিযোদ্ধারা নয় মাস যুদ্ধ করেছেন, এ ইতিহাস তর্কের উর্ধ্বে। এই প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস নি:সন্দেহে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জাতির পবিত্র আবেগ ও গৌরবের মধ্যে মিশে আছে, যে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে মাতৃভুমি বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ হয়েছেন এবং পঙ্গুক্তবরণ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধারা জাতিরৌ শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা তাদের প্রাপ্য। একাত্তরে কোন পার্থিব চাহিদার কারণে নয় বরং শোসনমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা জীবন বাজি রেখে ছিলেন। এমনকি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা সনদ পর্যন্ত নেননি, কেবলমাত্র নি:স্বার্থভাবে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু সরকার জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও সম্মান স্বরুপ মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু সুযোগ সুবিধা, কোটা সুবিধা এবং অনারিয়াম দেয়ায় অমুক্তিযোদ্ধাদের আবির্ভাব ঘটেছিল। মুক্তিযোদ্ধা শব্দটি আমাদের কাছে অনেক বেশি শ্রদ্ধার। কিন্ত যদি কেই প্রতারণার মাধ্যমে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে, তবে সেটি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদদের জন্য অবমাননাকর। তাই ঝালকাঠি রাজাপুর বাসির দাবী তদন্ত করার মাধ্যমে সত্য উদঘাটন করা হোক এবং দ্রুত এই অমুক্তিযোদ্ধা ইউনুচ আলী ডাকুয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করত: তার ২ ছেলের জালিয়াতি করে সরকারী চাকুরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করে এবং তাদেরকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা এলাকাবাসির প্রাণের দাবী।
https://slotbet.online/