স্টাফ রিপোর্টার : জয়পুরহাটে ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে মারধরের পরে সাথে থাকা ব্যবসায়ের অর্থ লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। জয়পুরহাট, ক্ষেতলাল উপজেলার, বড়তারা ইউনিয়নের, পাঠানপাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, গত ৯/১১/২০২৪ ইং তারিখে উপজেলার নূর ইসলাম ও আমিনুলের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পাঠানপাড়া বাজারে মারধর ও হৈ, চৈ, এর সংবাদ পেয়ে দৈনিক অপরাধ অনুসন্ধান পত্রিকার সাংবাদিক মোঃ বেলাল হোসেন (৪৫) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে রাত আনুমানিক ৮ টা ৩০ মিনিটের সময় পাঠানপাড়া বাজারে আলিমের চা স্টলের সামনে এমন ঘটনা ঘটে।
এ সময় সাংবাদিক মো: বেলাল হোসেন ঘটনার বিস্তারিত ভিডিও ধারন করার সময় উপজেলার উত্তর হাটশহর গ্রামের বড়তারা ইউপির সাবেক মেম্বার আব্দুর রাজ্জাক/সোমবারু এর পুত্র মো: মুকুল হোসেন(৪২) সাংবাদিক বেলাল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকেন। এ সময় তিনি উপজেলার হোপ হাট গ্রামের মৃত, জবীর উদ্দিন মন্ডল এর পুত্র শাহারুল ইসলাম ইউনুস (৩৫) ও মো: পলাশ (৩০) কে সাংবাদিক বেলাল হোসেন এর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে ও সেই সাথে মারধরের জন্য প্রস্তাব প্রদান করেন।।
অপরাধীরা দলবেঁধে এলোপাতাড়ি আক্রমণ শুরু করলে এক পর্যায়ে সাংবাদিকের প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে শাহারুল ইসলাম ইউনুস, লোহার রড দিয়ে মাথায় সজোরে আঘাত করে।
ফলে মাথায় রক্তক্ষরন সহ গুরুতর অসুস্থ হন। সেই সাথে পলাশ, সাংবাদিক বেলাল হোসেন এর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে মারধরে ব্যাস্ত থাকে।
সাংবাদিক বেলাল হোসেন সজোরে চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মেম্বার মুকুল সাংবাদিক এর পেন্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে কাছে থাকা আলু বীজ কেনার জন্য রাখা আনুমানিক ৫৪০০০ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার শক্ত অভিযোগ করেন সাংবাদিক বেলাল হোসেন।
এ বিষয়ে তিনি জয়পুরহাট জেলা বিজ্ঞ আমলী আদালত-৪ এ, ৩ জনকে আসামি করে ৩২৩,৩২৫,৩০৭,৫০৬(২)৩৭৯ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।
সাংবাদিক বেলাল হোসেন বলেন, ঘটনার রাতে রক্ত মাখা অবস্থায় প্রথমে জেলার ক্ষেতলাল থানায় উপস্তিত হলে পুলিশ সদস্যদের প্রায় সকলেই উপস্তিত ছিলেন। এমন সময় ঘটনার বিস্তারিত জানালে থানার কর্তব্যরত অফিসার ইনচার্জ মো: মশিউর রহমান বলেন, এখানে মামলা করে লাভ নেই, কারন বিভিন্ন ধরনের নেতারা আমাকে চাপ দেবে। আমি কিছুই করতে পারবনা।। আপনারা কোর্টে মামলা করেন।
বিষয় টি নিয়ে ১ নং মামলার আসামি মেম্বার মুকুলকে ফোন দিলে তিনি বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। কি ভাবে সাংবাদিক এর মাথা ফেটেছে বলতে পারবোনা। আর আমি কেন টাকা নিব তার পকেট থেকে। যদি যাচাই করেন তাহলে বাজারে গিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলুন তারা সত্য বলবে।
এ ছাড়া ২নং আসামি শাহারুল ইসলাম ইউনুস বলেন, আমরা বেলাল কে কেন মারব আর কি ভাবে মাথা ফেটেছে বলতে পারছিনা।
মামলার ৩ নং আসামি পলাশ ঘটনার ২ দিন পরে সাংবাদিক এর মোবাইল ফোন ফেরত দিলেও ফোনে থাকা ভিডিও ও সকল ডাটা ডিলিট করেছে অপরাধীগন।।
এ ঘটনা সম্পর্কে উক্ত বাজারের স্থায়ী দোকানী মৃত:অফির উদ্দিন এর পুত্র আমিরুল ইসলাম (৬২)পাঠানপাড়া বাজার বীজ ও বালাইনাশক ব্যাবসায়ি তিনি বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে সেটি পূর্ব শত্রুতার সূত্রপাতে তবে, বেলাল হোসেন একজন সাংবাদিক সেই সাথে ব্যাবসায়ী তাকে মারা সম্পূর্ন আইন বহির্ভুত।
বাজারের ফল ব্যাবসায়ী মৃত্যু, সুপদ সাদুর পুত্র উজ্জল চন্দ্র (৪০)বলেন, একজন সাংবাদিককে তার সংবাদ সংগ্রহ করতে হবে।তবে ভিডিও ধারণ করায় তাকে প্রাণে মেরে ফেলতে চেয়েছে এটি চরম পর্যায়ের অপরাধ।
এ ছাড়া একাধিক সরেজমিনে প্রত্যক্ষ কারিদের বক্তব্য একই কথা উঠে এসেছে। উপজেলার হোপ হাট গ্রামের মৃত্যু, আলতাফ হোসেন এর পুত্র এরশাদ(৩০)। খরিকাটা গ্রামের মুনছুর রহমান এর পুত্র রানা মন্ডল(৩৫)। হোপ গ্রামের দেলোয়ার এর পুত্র আহসান হাবিব(২৮)। কাঁচাকুল গ্রামের মৃত, নূরুল হোদার পুত্র আব্দুর রউফ(৪৫) ছাড়াও একাধিক ব্যাক্তিরা মামলায় উল্লেখ করা আসামি দের অপকর্মের কথা অকপটে শিকার করেন।
তারা সকলেই জানান, ঘটনা একেবারে সত্য, কিন্তু সে সময় কেউ বুঝতে পারেনি এমন করে সাংবাদিক এর উপরে আক্রমণ করবে।।
এ ছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু সহজে বলতে পারেনা, এর একটাই কারন ভয়। তাদের কাছে সব সময় দেশীয় অস্ত্র থাকে। এ ছাড়া মাদক ব্যাবসায়ী, মাদক মামলার আসামি ও হত্যা মামলার আসামি ছিলেন তারা।
এ ছাড়া সাবেক মেম্বার মুকুল একাধিক মামলার আসামি, সেই সাথে ব্যাংক চেক জালিয়াতিতে কারা বাস করা সহ একাধিক অপরাধ, অপকর্মে লিপ্ত থাকার জোর দাবি করেন এলাকাবাসী।
সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে এভাবে আক্রমণ করায় সাংবাদিক মহল বিচলিত ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের বৃহৎ সাংবাদিক সংগঠন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি (বিএমএসএস) এর কেন্দ্রীয় কমিটি এবং রাজশাহী বিভাগীয় নেতৃবৃন্দ। অতিদ্রুত আসামীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
ক্ষেতলাল থানা পুলিশের এমন আচরনে ক্ষুব্ধ স্থানীয় সাংবাদিক মহল।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার ” মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব” এর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি অফিসিয়াল কাজে অতি ব্যস্ততার কারনে মতামত প্রদান করতে পারেন নি।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক বেলাল হোসেন বিষয়টি সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
https://slotbet.online/